
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের দিন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ঘটে যায় এক অস্বাভাবিক ঘটনা। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান সোহানকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করেই আটক করে। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে হলে অবস্থানকালে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সোহান শুধু রাজনৈতিক পরিচয়ের জন্যই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়েরও সাবেক শিক্ষার্থী। তিনি ৩৬তম ব্যাচের (২০০৬-০৭ সেশন) ইংরেজি বিভাগের ছাত্র ছিলেন এবং দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ঘটনার পর সোহান ব্যাখ্যা দেন, তিনি আগের রাতে অসুস্থ বোধ করায় হলে এসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তার কথায় বোঝা যায়, এটি ছিল একেবারেই ব্যক্তিগত ও স্বাস্থ্যগত কারণ। কিন্তু এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তিনি কোনো অনুমতি নেননি, যা পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগে পরিণত হয়। অথচ ক্যাম্পাসে সাবেক শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়া নতুন কিছু নয়। অসুস্থ অবস্থায় পরিচিত একটি হলে শুয়ে পড়াটিকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা অনেকের কাছেই অযৌক্তিক মনে হয়েছে।
হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম দাবি করেন, নির্বাচন চলাকালে হলে সাবেক শিক্ষার্থীর অবস্থান আচরণবিধির লঙ্ঘন। তাই তাকে প্রক্টরিয়াল টিমের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলমও একইভাবে জানান, নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, নিয়মের কঠোর প্রয়োগের আড়ালে একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করেছে। কারণ, সোহান জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একজন কেন্দ্রীয় নেতা হওয়ায় তাকে আটক করার ঘটনা অনেকের কাছেই উদ্দেশ্যমূলক মনে হচ্ছে।
ফলে এই ঘটনাকে অনেকেই একটি অনাকাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক হয়রানি হিসেবে দেখছেন। একজন সাবেক শিক্ষার্থী এবং জাতীয় পর্যায়ের ছাত্রনেতা হিসেবে তার মর্যাদা রক্ষা না করে বরং তাকে নির্বাচনকালীন সময়ে বিব্রত করার চেষ্টা করা হয়েছে। অসুস্থতার কারণে হলে অবস্থান করা সোহানকে আটক করা ন্যায়বিচারের চেয়ে বরং অন্যায়ের দৃষ্টান্ত হিসেবেই ক্যাম্পাসে আলোচিত হচ্ছে।
প্রতিবেদনঃ শফিকুর রহমান