মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ থেকে আদমপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার সড়ক এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে পাঁচ কিলোমিটার অংশে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। কার্পেটিং উঠে গিয়ে ইট-পাথর বের হয়ে আছে, কোথাও আবার মাটিও ভেঙে পড়েছে। ফলে প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই রাস্তায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যাত্রীবাহী টমটম, সিএনজি, ইজিবাইক প্রায়ই উল্টে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি। গর্ভবতী নারী বা অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নিতে গেলে তাদের যাত্রা হয়ে ওঠে কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক চালক অভিযোগ করেছেন, প্রায়ই গাড়ির এক্সেল ভেঙে যায়, টায়ার নষ্ট হয়।
রাস্তাটি সর্বশেষ সংস্কার হয়েছিল প্রায় ছয় বছর আগে। তারপর থেকে আর কোনো রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। ২০২১-২২ অর্থবছরে তিন কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে এই সড়ক সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। ঠিকাদার কাজ পায়ও, কিন্তু নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়েছে বলে কাজ শুরু করেননি। এতে প্রকল্প আটকে যায়, আর মানুষ পড়ে যায় সীমাহীন ভোগান্তিতে।
এলজিইডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টেন্ডার হয়েছিল, কিন্তু কাজ হয়নি। তবে তারা আশ্বাস দিয়েছেন, নতুন উদ্যোগ নেওয়া হবে। কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, এ ধরনের আশ্বাস তারা বারবার শুনেছেন, কিন্তু বাস্তবে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
এই অবস্থায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। জেলার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে জেলা প্রশাসক চাইলে বিষয়টি তদারকি করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি কোনো পরিদর্শন করেননি, ঠিকাদার কাজ না করলে নতুন টেন্ডার আহ্বান বা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নেননি। স্থানীয়দের মতে, জেলা প্রশাসকের এই অবহেলার কারণেই সড়ক সংস্কারের কাজ এগোয়নি, আর জনগণের দুর্ভোগ দিন দিন বেড়েই চলছে।
প্রতিবেদনঃ শফিকুর রহমান