
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের জেরে একাধিক ছাত্রসংগঠন, শিক্ষক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
অভিযোগকারীরা বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় শুরু থেকেই নানা ধরনের অনিয়ম ঘটতে থাকে। ভোট গ্রহণ শেষে বেশ কয়েকটি হলে ব্যালট বাক্স সিনেট হলে সরিয়ে নেওয়া হয়। এতে ভোটের স্বচ্ছতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এ ছাড়া অনেক হলে প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। এমনকি প্রার্থীরাও নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেননি বলে অভিযোগ তোলা হয়।
ভোটার তালিকা নিয়েও অসঙ্গতির অভিযোগ উঠে। কিছু হলে ভোটার তালিকায় ছবির অনুপস্থিতি ভোট প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তাছাড়া অনেক ভোটার আঙুলে কালি না লাগিয়েই ভোট দিতে পেরেছেন। আবার কোথাও কোথাও কালি দ্রুত মুছে ফেলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত ব্যালট পেপার মুদ্রণ ও ব্যালট পেপার উৎপাদন ও বিতরণ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েও গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।
কারচুপির অভিযোগে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল, তিনজন শিক্ষক প্রার্থী, প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের ছয়টি প্যানেল এবং কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোট বর্জন করেন। প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের ব্যানারে থাকা ‘সম্প্রীতির ঐক্য’, ‘সংশপ্তক পর্ষদ’, ‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টসহ বিভিন্ন সংগঠন ভোটের অনিয়ম ও জালিয়াতির প্রতিবাদে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বিশেষভাবে অভিযোগ তোলেন যে, নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে এবং কারচুপির মাধ্যমে ফল পাল্টে দিতে শিবিরের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। তাঁদের অভিযোগ, গোপনে সংগঠিত হয়ে শিবির ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করেছে এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় ভোটকার্যে অনিয়ম করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর ও মওলানা ভাসানী হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীরা দাবি করেন, এমন প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক চর্চার কোনো অগ্রগতি হয় না। তাঁরা অবিলম্বে এই ভোট বাতিল করে নতুন করে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানান।
প্রতিবেদনঃ শফিকুর রহমান