
আগুন জালিয়ে সড়ক অবরোধ করছে, গণধিকার পরিষদের কর্মীরা
রাজধানীর পল্টন মোড়ে বিকেল নামতেই ধীরে ধীরে জমতে শুরু করে গণ অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীরা।রাস্তাজুড়ে তাদের পদচারণা আর স্লোগানের শব্দ বাতাসে নেমে আসে, যেন প্রতিটি শব্দে যেন ক্ষোভ ও হতাশার বার্তা ভেসে বেড়াচ্ছে। মানুষ দেখছে, কীভাবে কয়েক দিন আগে দলের শীর্ষ নেতা নুরুল হক নুরসহ একাধিক নেতাকর্মী নির্মমভাবে হামলার শিকার হয়েছেন। রক্তে ভিজে যাওয়া তাদের শরীর, হাসপাতালে নেয়ার দৃশ্য—সবকিছু চোখে ভাসছে। এত কষ্ট ও আঘাতের পরও, দেশের বিচারব্যবস্থা যেন নিস্তব্ধ। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার বা কোনো অভিযোগ দায়েরের খবর নেই। এই অবিচার এবং রাষ্ট্রীয় নীরবতা যে কতোটা গভীর, সেটিই আজকের মিছিলে প্রতিটি পদক্ষেপে প্রতিফলিত হচ্ছে।
প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা এই অবরোধে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র পল্টন স্তব্ধ হয়ে পড়ে। যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকে, সাধারণ মানুষ আটকে পড়ে, কিন্তু প্রতিবাদকারীরা থেমে থাকেনি। তাদের কণ্ঠে একটাই দাবি—নুরসহ আহত নেতাকর্মীদের ওপর হামলার বিচার হোক, দায়ীদের গ্রেপ্তার করা হোক, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করুক। মিছিলের মধ্য দিয়ে শোনা যায় ক্রন্দন আর রাগের মিশ্রণ, যেন শহরের রাস্তাগুলো তাদের যন্ত্রণার সাক্ষী। তারা অভিযোগ করে, সরকার আসলে হামলাকারীদের রক্ষা করছে, অপরাধকে মদদ দিচ্ছে। সেই কারণেই আজও বিচার মেলেনি।
জনতার চোখে প্রতিটি পদক্ষেপ যেন দুঃখের প্রতিচ্ছবি। কেউ বলতে পারে, সরকারের এই নীরবতা শুধু বিচারহীনতার প্রতীক নয়, এটি প্রমাণ করে ক্ষমতাসীন মহলই সহিংসতার আশ্রয় দিচ্ছে, যাতে ভিন্নমত স্তব্ধ হয়ে যায়। অথচ নুরের মনোবল অটুট। বারবার আঘাতের পরও তিনি নীরব হননি, তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে সত্য উচ্চারণ করে চলেছেন। তার শরীর ক্ষতবিক্ষত হলেও প্রতিবাদের ভাষা থেমে যায়নি। আজকের মিছিল কেবল একটি প্রতিবাদ নয়; এটি ছিল সাহস, দৃঢ়তা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রতীক। বারবার আঘাতের পরও টিকে থাকার অদম্য সংকল্প যেন শহরের প্রতিটি কোণ থেকে শোনা যাচ্ছে।
প্রতিবেদনঃ শফিকুর রহমান