
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল’-এর নাম পুনরায় ‘শেখ মুজিবুর রহমান হল’ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিষয়টি হল প্রশাসনের সুপারিশ ও শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আবেদনের পর সিন্ডিকেট সভায় আলোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্র মতে, সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে এবং প্রাথমিকভাবে নাম পরিবর্তন করা হবে বলে নীতিগতভাবে সম্মতি এসেছে। এখন শুধু চূড়ান্ত রেজুলেশনের অপেক্ষা। রেজুলেশন জারি হলে নাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তিত হবে।
হলটির শিক্ষার্থীরা বছরের শুরুতে নাম সংস্কারের জন্য আবেদন করেন। এই আবেদনের সঙ্গে আবাসিক শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা সমর্থন প্রকাশ করেন। জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে হলটির নাম ছিল ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল’, যা পরে ২০১৩ সালে সেই সময়কার আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগে ‘জাতির জনক’ শব্দ যুক্ত করে ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল’ করা হয়।
এবারের নাম পরিবর্তনের প্রক্রিয়া অনেক বিশ্লেষকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কারণ, বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় নেই। স্বাভাবিকভাবে শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে মিল রেখে নাম পরিবর্তন করা হলেও, অনেকেই এটিকে রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রতীকী ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। বিশেষ করে এই নামফেরত যাত্রায় সরাসরি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম রাখা হচ্ছে, যা রাজনৈতিক মহলে “আওয়ামী লীগের নেতা এবং প্রতিষ্ঠাতার অব্যাহত প্রভাব” হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
উল্লেখযোগ্য, চলতি বছরের শুরুতে একদল শিক্ষার্থী প্রাক্তন নামফলক পরিবর্তনের চেষ্টা চালায়। তারা রাতের আঁধারে ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল’ নামফলক মুছে ফেলেন এবং ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল’ নাম লিখে দেন। সেই সময় নামফলক ভাঙার অভিযোগও উঠে।
এই সব ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে, হলের নাম পুনরায় ‘শেখ মুজিবুর রহমান হল’ করা কেবল শিক্ষার্থীদের দাবির ফল নয়, বরং রাজনৈতিকভাবে একটি প্রতীকী সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এটি ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের সক্রিয় পুনরায় রাজনৈতিক প্রভাবের ইঙ্গিতও দিতে পারে।
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শফিকুর রহমান