ছাত্রদলের নুরু হত্যার আসামীরা বহাল তবিওতে

২০১৭ সালের ২৯ মার্চ, রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে, চট্টগ্রাম শহরের চকবাজার থানাধীন চন্দনপুরার বাসা থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম নুরুকে তুলে নিয়ে যায় রাউজান থানার এসআই জাবেদ।

জানা যায়, আওয়ামী লীগের তৎকালীন এমপি এ বি এম ফজলে করিমের নির্দেশে রাউজান থানার তৎকালীন ওসি কেফায়েত উল্লাহ, এসআই জাবেদ’কে নুরু’কে বাসা থেকে উঠিয়ে নিতে পাঠিয়ে ছিলেন।

সেদিন রাতে পুলিশ দেখে নুরুর ভাগ্নে রাশেদুল ইসলাম বাসার প্রধান দরজা খুলে দেন। এ সময় বাসায় ঘুমন্ত নুরুল আলমকে বিছানা থেকে টেনে তুলে হাতে হাতকড়া পরিয়ে দেন এসআই জাবেদ। পরিবারের সদস্যদের বলেন গ্রেপ্তারী পরোয়ানায় নুরু’কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তবে পরিবারের সদস্যদের প্রশ্নের মুখে, তিনি কোন পরোয়ানা দেখাতে পারেননি।

বাড়ির বাইরে অপেক্ষমাণ একটি সাদা রঙ এর মাইক্রোবাসে করে ছাত্রদল নেতা নুরুল আলম নুরুকে নিয়ে প্রথমে যাওয়া হয় রাউজানের নোয়াপাড়া কলেজ ক্যাম্পাসে, সেখানে আগে থেকে অপেক্ষারত ফজলে করিমের আওয়ামী ক‍্যাডারদের গাড়িতে তুলে, নোয়াপাড়া পুলিশ ক্যাম্পে নুরুকে নিয়ে কাপড় দিয়ে চোখ-মুখ বেঁধে ও রশি দিয়ে দুই হাত আটকে ভয়াবহ শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।

নির্যাতন শেষে, তাঁর মাথায় গুলি করে হত্যার পর রাউজান বাগোয়ান ইউনিয়নের খেলারঘাট কর্ণফুলী নদীর তীরে লাশ ফেলে যায় ওই হত‍্যাকারীরা, পরদিন ৩০ মার্চ তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

দীর্ঘ সাত বছর পর, নুরুল আলম নুরুর স্ত্রী সুমি আক্তার ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বাদী হয়ে চট্টগ্রামের চকবাজার থানায় নুরুল আলম নুরু হত্যার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেন যেখানে সাবেক সংসদ সদস‍্য ফজলে করিম ছাড়াও নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির প্রাক্তন ইনচার্জ সহ ১৭ জনকে আসামী করা হয়েছে, তবে এক বছর অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত এই মামলায় উল্লেখযোগ‍্য কোন অগ্রগতি হয়নি। বরং নুরু হত্যার সাথে জড়িত আসামীদের কয়েকজনকে বেশ বহাল তবিয়তেই চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর অসুস্থ স্ত্রী ও মামলার বাদী সুমি আক্তার।

প্রতিবেদনঃ শফিকুর রহমান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *